মাগুরার মহম্মদপুরে কালুকান্দি গ্রামে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার আজিজুর রহমানের (৩০) বিছিন্ন মাথা ও একটি পা সোমবার বিকালে মাগুরা সদরের জগদল এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে। র্যাব খুলনার অধিনায়ক লেঃ কর্নেল রওশনুল ফিরোজের নেতৃত্বে র্যাব-৬ এর একটি দল সোমবার বিকালে ওই এলাকার একটি কালভার্ট ভিতর থেকে পা’টি উদ্ধার করে। পরে রাত ৮ টার দিকে একই এলাকার পাট ক্ষেতের মধ্যে থেকে মাথা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৬ লে. কর্ণেল রওশনুল ফিরোজ জানান, হত্যাকান্ডের মূল আসামি আশরাফ হোসেন (৩৩)কে সোমবার দুপুরে যশোরের শার্শা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিলে সে মোতাবেক জগদলের ওই এলাকা থেকে নিহত আজিজুরের প্রথমে পা ও পরে রাতে মাথা উদ্ধার করা হয়।
আজিজুর রহমান (৩০) মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালি গ্রামের মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে। ছোটবেলায় তার বাবা মা মারার যাওয়ার পর থেকেই বিনোদপুর ইউনিয়নের কালুকান্দি গ্রামে তার নানা আবুল কাশেমের বাড়িতে থেকে বড় হয়েছে। সে ঢাকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
গত ৫ জুন আজিজুর সকালে বাসা থেকে যশোরের উদ্দেশে রওনা হয়ে নিখোঁজ হয়। পরে ৬ জুন সকালে কালুকান্দি গ্রামের মতিয়ার মোল্যার পুকুরে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত একটি বস্তা দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বস্তাটি উদ্ধার করলে তার ভিতর মাথা ও একটি পা বিহীন লাশ পাওয়া যায়। পরে লাশের পরিহিত পোশাক দেখে এটি আজিজুর রহমানের মরদেহ শনাক্ত করে ছোট ভাই হাবিবুর রহমান। পরে ওইদিন হাবিবুর রহমান মহম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে হত্যা ও গুমের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আসামি গ্রেপ্তারসহ বিচ্ছিন্ন মাথা ও পায়ের সন্ধানে নামে র্যাব। পাশাপাশি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে যশোরের শার্শা থেকে আজিজুরের খুনি আশরাফকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় সে র্যাবের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জগদলের ওই এলাকা থেকে নিহত আজিজুরের দেহের খন্ডিত একটি পা উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা রওশনুল ফিরোজ এ বিষয়ে আরো জানান, আশরাফ সদর উপজেলার মালিকগ্রামের আহম্মদ আলী বিশ্বাসের ছেলে। মাগুরা শহরের বেলতলায় তার হোমিওপ্যাথির ব্যবসা আছে। পাশাপাশি সে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং-এমএলএম ব্যবসা করে। এই ব্যবসার সূত্রেই আজিজুরের সাথে তার সম্পর্ক। আশরাফ আজিজুরের কাছে ব্যবসায়িক ৩ হাজার টাকা পেত। কিন্তু আজিজুর সেটি ৫ শত টাকা বলে দাবি করে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরেই ৫ জুন আশরাফ আজিজুরকে নিজ হোমিও দোকানে ডেকে এনে হত্যা করে। পরে দেহ থেকে মাথা ও পা খন্ডিত করে জগদলের ওই কালভার্টে ফেলে। দেহের বাকি অংশ বস্তাবন্দি করে আজিজুরের মামা বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুরের কালুকান্দি একটি পুকুরে ফেলে আত্মগোপন করে।