ভিক্ষুকমুক্ত ঝিনাইদহে অন্ধ ও প্রতিবন্ধি ভিক্ষুকদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে ভিক্ষুক মুক্ত ঝিনাইদহ শ্লোগানের কার্যকারীতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। গত শুক্রবার বিকালে শহরের পায়রা চত্বরে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের সামনে ঘটা করে এই কমিটি গঠন করা হয়। ৯ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে আব্দুল হাকিম। এছাড়া সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন হারুন অর রশীদ, সহ সম্পাদক পদে মোছাঃ চম্পা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক মোছাঃ সুফিয়া বেগম, প্রচার সম্পাদক আব্দুল খালেক, কোষাধ্যক্ষ মোঃ সাহেব আলী ও নির্বাহী সদস্য পদে অসীম কুমার এবং রেকছোনা বেগম নির্বাচিত হন। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে ভিক্ষুক মোঃ সবুজ মিয়া ও এটিএম ওয়াহিদুজ্জামান নামে দুই জনকে রাখা হয়েছে। শনিবার বিকালে নবগঠিত এই সংগঠনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, অনেকেই ভুয়া প্রতিবন্ধি ও রোগাক্রান্ত সেজে ঝিনাইদহে এসে ভিক্ষা করে চলে যায়। পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার কথা বলে সাহায্য নিয়ে যায়। মাদকসেবীরাও ভিক্ষা করে। আমাদের এই নতুন কমিটি এসব প্রতারকদের প্রতিহত করবে। উল্লেখ্য এই সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই অন্ধ এবং বাকি সদস্যরা শারিরীক প্রতিবন্ধি। ভিক্ষুকরা জানান, সরকার থেকে দুই বছর আগে তাদের যে সাহায্য দেওয়া হয়েছে তাতে সংসার চলে না। এ জন্য তারা এখনো ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকারী সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ভিক্ষুক আছে ৫৮১ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভায় আছে ৭০ জন। এ সব ভিক্ষুকদের জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদসহ ১৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ফিস, উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে দেওয়া হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৭১ টাকা। সর্বমোট বিভিন্ন খাত থেকে ভিক্ষুকদের দেওয়া হয় ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সরকারী ভাবে দাবী করা হয় সদর উপজেলায় ৫৮০ ও পৌরসভায় ৭০ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১৯ জনকে ফেয়ার প্রাইজ কার্ড, ১ জনকে সেলাই মেশিন, ১১৬ জনকে হাসমুরগী, ২১ জনকে ওয়েট মাপার মেশিন, ৩৪ জনকে ছাগল, ৭৩ জনকে নগদ অর্থ, ১৫ জনকে প্রতিবন্ধি ভাতা, ২০ জনকে বিধবা ভাতা, ৩১ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৩০ জনকে ভিজিডি কার্ড, ৪ জনকে ৭টি করে শাড়ি-লুঙ্গি ও ১৭ জনকে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। পৌরসভার ৭০ জন ভিক্ষিুককেও অনরুপ উপকরণ দেয় সরকার। এ সব প্রদানের পরও কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আগের মতোই গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারে ভিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে।