28.9 C
Bangladesh
Monday, 23, June 2025
spot_img

অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী সাবিনার স্বপ্ন ভঙ্গের দোষী কে?

সাবিনা খাতুনের ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। কিন্তু প্রতারণামুলক বিয়ে তার সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। মেহেদীর রং শুকাতে না শুকাতেই স্বামীর তালাক তার জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। সাবিনা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের দিনমজুর নূর মোহাম্মদের মেয়ে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ কলেজের অনার্স ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সাবিনা পিতার অভাব অনটনের সংসারে পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত দিন পার করছিল। কিন্তু ঘটকের মাধ্যমে ভালো বিয়ের প্রস্তাব পাওয়ায় দিনমজুর পিতা সাবিনাকে কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে আব্বাস উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের আগে আব্বাস উদ্দীন সরকারী চাকরী ও মোটা অংকের বেতন পান বলে মেয়ের পরিবারকে জানিয়েছিলেন। আব্বাস উদ্দিন আনসার ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনে। তাতেও মেয়ের কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু বিয়ের ১৪দিন পর স্বামীর চাকরী স্থায়ী করণের জন্য দিনমজুর শ্বশুরের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক চায় আব্বাস। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এনজিও থেকে ঋন করে জামাইয়ের হাতে টাকা তুলে দেন শ্বশুর নুর মোহাম্মাদ। এতেও শান্ত হয়নি আব্বাসের পরিবার। শ্বশুর বাড়িতে কারণে অকারণে সাবিনাকে নির্যাতন শুরু করা হয়। বিয়ের পর স্বামী আব্বাস উদ্দিন কর্মক্ষেত্রে চলে গেলে শাশড়ি বাড়ির বাথরুমে তালা মেরে নতুন পুত্রবধূকে প্রাকৃতিক কাজ কর্ম করতে বাধা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় সাবিনার লেখাপড়া। দিন যতই যায় ততই সাবিনার উপর নির্যাতন বেড়ে যায়। শ্বাশুড়ি ও ভাসুরের স্ত্রীর শারীরিক নির্যাতনে বাধ্য হয়ে দিনমজুর পিতার বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। বিয়ের আগে উভয় পক্ষের চুক্তিতে দেড় লাখ টাকার কাবিন করার সিদ্ধান্ত হলেও কাবিননামায় মাত্র ২৫ হাজার টাকা করা হয়। বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার শিকার সাবিনা অসহায় হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তালাক হয় সাবিনার। তালাকের পর ঝিনাইদহ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন, যার মামলা নং এনটিসিঝি ২৪৪/২০২১। মামলাটি কোটচাঁদপুর থানার এসআই আব্দুল মান্নান তদন্ত করে সাবিনার অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। পুলিশী তদন্তে সাবিনা আরো ভেঙ্গে পড়েন। তিনি এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি পিটিশন দেন। সাবিনা গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, মাত্র ১৪ দিনের মাথায় তার হাতের মেহেদী মুছে ফেলা হলো। প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে বিয়ে করা হলো। আমার পড়ালেখা, কলেজ সব বন্ধ করা হলো, এখন আমি কার কাছে বিচার চাইবো ?

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles