28.9 C
Bangladesh
Saturday, 17, May 2025
spot_img

ঝিনাইদহ ডিসি কার্যালয়ে ৫ সাংবাদিককে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ

জেলা প্রশাসকের দপ্তরে মারামারির দৃশ্য ভিডিও ধারন করে অসংখ্যা সংবাদের ভিডিও খুয়ালেন ঝিনাইদহের পাঁচ সংবাদকর্মী। তাদের কাছ থেকে মুচলেকা লিখে নিয়ে মুক্তি দিলেও মুছে দেওয়া হয়েছে মোবাইলে থাকা মারামারির ভিডিও সহ প্রয়োজনীয় সকল ভিডিও চিত্র। এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ৩১ অক্টবর ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দপ্তরের তৃতীয় তলায়। এ ঘটনার স্বীকার সংবাদকমীরা বুধবার ২ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের নিকট বিচার দাবি চেয়ে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন।

প্রশাসনের কর্মকর্তারা সংবাদকমীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে কৈফিয়ত চান কার অনুমতি নিয়ে মারামারির দৃশ্য ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক ঘটনার অনুমতি নেওয়া সম্ভব হয়নি জানানোর পর কর্মকর্তারা সংবাদকমীদের একটি ঘরে আটকে রেখে মানষিক ভাবে নির্যাতন করেন। পরে এই ঘটনার সংবাদ কোথাও প্রচার হবে না, আমরা লিখবো না এমন মুচলেকাও তাদের দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে তার এলাকার জনসাধারণ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের তদন্ত চলছিল সোমবার আরডিসি আনিচুল ইসলামের দপ্তরে। অভিযোগকারীগন এবং চেয়ারম্যানের সমর্থকরা সেখানে ভীড় করে। নিচে এ সময় চলছিল নবগঙ্গা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন। সংবাদকমীরা সেখানে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ তৃতীয়তলায় তদন্তস্থলে চিৎকার শুনে ছুটে যান সংবাদকর্মী আলী হাসান, বাহারুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, স¤্রাট হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম। তারা সেখানে দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কি দেখে মুটোফোনে ভিডিও ধারন করেন।

তাদের ভিডিও ধারন করতে দেখে ক্ষেপে যান সেখানে উপস্থিত সিনিয়র সহকারী কমিশনার পার্থ প্রতিম শীল ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে আসেন। তিনি তাদের হাত থেকে মোবাইলগুলো ছিনিয়ে নেন। এরপর সেখানে আসেন জেলা প্রশাসকের দপ্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তা সালমা সেলিম, রাজীবুল ইসলাম খাঁন ও মোঃ শরিফুল হক। তারা একে একে মোবাইল ফোনে থাকা সকল ভিডিও চিত্র মুছে ফেলেন। এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজার কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে নানা ভাবে প্রশ্ন করে মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তোলেন। এক পর্যায়ে আজকের ঘটনায় কোনো সংবাদ লিখবো না মর্মে তাদের দিয়ে মুচলেকা লিখে নিয়ে মুক্তি দেন।

ভুক্তভোগি সংবাদকর্মী আলী হাসান জানান, এ ঘটনার পর তার কেটেছে মানষিক কষ্টে। কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। প্রশাসনের কর্মকর্তারা লিখে নিয়েছেন এই বিষয়ে কিছু করতে পারবেন না। তারপরও সবকিছু ভুলে থাকতে পারছেন না। সংবাদকর্মীদের উপর এই নির্যাতন কোনো ভাবেই মেনে নেওয়ার মতো ঘটনা নয়।

ভুক্তভোগী আরেক সংবাদকর্মী বাহারুল ইসলাম জানান, পার্থ প্রতিম শীল তাদের সঙ্গে যে আচারন করেছেন তা ভোলার মতো না। ভাবটা এমন ছিল যেন কোনো চোর ধরে আটকে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার পার্থ প্রতিম শীল এর সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না বলে জানান। তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। আর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সালমা সেলিম জানান, সেখানে কোন মারামারি হয়নি, হাতাহাতি হয়েছে। সেখানে এসে ভিডিও করা ঠিক হয়নি। তিনি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও মুছে দিয়ে মুচলেকা নিয়ে ছাড়ার বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles