কালীগঞ্জে গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটো চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। তাদের মধ্যে অন্যতম চাষি জার্ফ উল্লাহ ফিরোজ। বাজারে যখন টমেটোর চড়া দাম; ঠিক তখনই টমেটো বিক্রি করছেন তিনি। শুধু ফিরোজই নন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এলাকায় একাধিক কৃষক গ্রীষ্ম কালীন টমেটো চাষ করেছেন।
শিক্ষীত যুবক জাফর উল্লাহ ফিরোজ। লেখাপড়ার পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন গ্রীনভ্যালী এগ্রোফার্মে বেশির ভাগ সময় তিনি গ্রীনভ্যালী এগ্রোফার্মে টমেটো ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করেন। এই ফার্মে শুধু টমেটো নয় বিভিন্ন রকম ফল ও সবজি চাষ। জাফর উল্লাহ ফিরোজ কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের ষাটবাড়িয়া গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে তিনি বর্তমানে কালীগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ আড়পাড়াতে বসবাস করেন। শুধু জাফর উল্রাহ ফিরোজই নয়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন এলাকার অনেক কৃষক। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ লাভজনক হওয়ায় এলাকার কৃষকদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বেড়েই চলেছে। টমেটোর ফলন এবং অধিক দামে বিত্রি করতে পারায় তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাফর উল্লাহ ফিরোজের এই সাফল্য দেখে অন্য চাষিরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলি মাঠে টমেটো চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি। দিনি ৫ হাজার টাকায় লিজ নেওয়া ৫বিঘা জমিতে বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করে ব্যাপক ভাবে লাভবান হয়েছেন।উপজেলায় গ্রীষ্ম কালীন হাইব্রিড টমেটো বারি-৮ চাষ করে সফল হয়েছেন একাধিক কৃষক। টমেটোর ফলন দেখে তারা খুশি। তাদের সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক কৃষক গ্রীষ্মকালীন চমেটো চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। হাইব্রিড টমেটো বারি-৮ একটি উচ্চ তাপ সহিষ্ণু উচ্চফলনশীল গ্রীষ্মকালীন জাত। আকর্ষণীয় লালবর্ণ বিশিষ্ট এর ত্বক এবং শাঁস। ফল বেশ মাংসল। প্রতিটি গাছে গড়ে ৪০-৪৫টি ফল ধরে। প্রতি ফলের গড় ওজন ৬০-৬৫ গ্রাম। ফলের আকৃতি চ্যাপ্টা গোলাকার ধরনের।শুরু থেকে কৃষি অফিস সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। দোআঁশ মাটি টমেটো চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এরইমধ্যে স্থানীয় বাজারে পাইকারি হারে টমেটো বিক্রি করছে। আবার এখানকার টমেটো েেশর বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়িরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
‘ভালো ফলন ও চারার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য পলিথিন দিয়ে ছাউনি দিতে হবে। ছাউনির উচ্চতা মাঝখানে ৬ ফুট ও দুই পাশে ৪.৫ ফুট এবং দুটি ছাউনির মাঝে ৫০ সে.মি চওড়া নালা রাখতে হবে। যাতে ছাউনি থেকে নির্গত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনসহ অন্য পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়।’ জাফর বলেন,জমি প্রস্তুত, সার, ঔষুধ ও পরিচর্যা বাবদ ৮২ থেকে ৮৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গত জুন মাসের ১৮ তারিখে তিনি বারি-৮ জাতের টমেটোর চারা রোপন করেন। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৭৫ হাজার টাকার টমেটো বাজারে বিক্রি করেছেন। বাজার দর হিসাবে ৭৫ থেকে ১শ ৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করেছেন। জমিতে গাছ লাগানোর ৫৫ দিন পর থেকে তিনি টমেটো সংগ্রহ শুরু করেন। ০.৫বিঘা জমিতে তিনি ৩ লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন বলে জানান। ৪/৫ মাস পর্যন্ত তিনি বাজারে টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
জাফর উল্লাহ ফিরোজ বলেন, খরচ বাদে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা লাভ হবার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি অথিক লাভের আশায় শুধু টমেটো নয় ড্রাগন ২.৫বিঘা, পেয়ারা ১ বিঘা, কুল ২ বিঘা, মরিচ ১ বিঘা, লাউ ১ বিঘা ও বীজ পাট ৭ বিঘা চাষ করছেন। বর্তমানে ১৫ বিঘা জমিতে তিনি এসব ফল ও সবজির চাষ করেছেন। তিনি আরও জানান, মোট ৫০ বিঘা জমিতে তিনি বিভিন্ন জাতের ফল ও সবজি চাষ করবেন এমনটাই আশা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি জানান, এই উপজেলার বারবাজার, কাষ্টভাঙ্গা, রাখালগাছী, মালিয়াট ইউনিয়নে এই বছর ২.৫ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে। আমরা কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা করছি। আমরা তাদের প্রতি বছর বিভিন্ন সময়ে টেনিংএর ব্যবস্থা করে থাকি।