28.9 C
Bangladesh
Thursday, 19, June 2025
spot_img

কুষ্টিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে লালন সাঁইজির তিরোধান দিবস

অনলাইন ডেস্ক :

আগামী ১৭ অক্টোবর (১ কার্তিক) আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪ তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়িতে ১৭, ১৮ ও ১৯ তারিখ তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। 

তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কালি নদীর পাড় ঘেঁষে লালন মাঠে এক সপ্তাহ আগে থেকেই বসেছে শতাধিক দোকান। লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড় ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীরা। সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। 

গুরুশিষ্য, ভক্ত-অনুসারী আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। দিনরাত গান ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন অ্যাকাডেমির আয়োজনে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা শুরু হবে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে হাজারো লালন ভক্ত অনুসারীরা লালন আখড়াবাড়িতে আসছেন। 

লালন মেলায় অনুষ্ঠানে প্রতিদিনই আলোচনা সভা শেষে মঞ্চে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। যেখানে গাইবেন লালন অ্যাকাডেমির শিল্পী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউল শিল্পী ও ভক্তরা। 

১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকে তার স্মরণে লালন অ্যাকাডেমি ও জেলা প্রশাসন এই স্মরণোৎসব চালিয়ে আসছে। প্রতিবছর ১ কার্তিক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস পালন করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লালন মেলা উপলক্ষ্যে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে হাজারো লালন ভক্ত-অনুসারীরা এসেছেন। প্রতিনিয়ত লালন ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেড়েই চলেছে। 

লালন মেলা শুরুর আগেই আখড়াবাড়িতে ভক্ত অনুসারীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। ভক্ত-অনুসারীরা খণ্ডখণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। ভক্ত অনুসারীরা লালন ফকিরের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছেন আস্তানা। লালন মেলায় কালি নদীর পাড়ে মাঠে বসেছে গ্রামীণ মেলা। আশপাশের এলাকায়ও হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। 

লালন ভক্ত ও অনুসারীরা জানান, প্রতিবারই লালন মেলায় লাখ লাখ মানুষের পদচারণা মুখরিত হয়। এবার মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাজারো ভক্তরা এসেছেন। যতই সময় পার হচ্ছে ততই ভিড় বাড়ছে।

লালন ফকিরের গানে গানে এখন মুখরিত এই এলাকা। মরমী সাধক ফকির লালন শাহ কুষ্টিয়ার শহরতলি কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে ১৮৯০ সালের ১ কার্তিক মারা যান। এখানে পরবর্তী সময়ে লালন মেলার আয়োজন শুরু হয়। সেই থেকে প্রতি বছরই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করা হয়। 

কুষ্টিয়ার আখড়াবাড়ির ভেতরে ও বাহিরে যেন পা ফেলার জায়গা থাকে না। এবারও লালন মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাজারো ভক্তরা এসেছেন।  সাধু ভক্তদের এই মিলন মেলায় লালনের রেখে যাওয়া মানবমুক্তির আধ্যাত্মিক বাণী সম্বলিত গান গাওয়া হয়। লালন শাহের গান শুনতে ও এখানে ঘুরতে জড়ো হচ্ছেন অসংখ্য দর্শনার্থীরা।

প্রতিদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভা শুরু হবে, আলোচনা শেষে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। মেলার সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles