ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হওয়া রোগীরা এখন ডেথ ফোবিয়া রোগে ভুগছেন। বিদ্যুৎ চলে গেলেই তাদের মধ্যে ভয় ও আতংক নেমে আসছে। কক্ষের মধ্যে গুমোট পরিবেশ বিরাজ করায় রোগীদের মধ্যে কাজ করছে অস্থিরতা। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু থাকলেও হাসপাতালে দ্রæত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে রোগীদের মধ্যে ডেফ ফোবিয়া ভর করছে। এমন একজন রোগী হচ্ছেন শৈলকুপার হাট ফাজিলপুর এলাকার হুরাইয়রা। করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি ৩দিন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের বিদ্যুৎ চলে গেলে ১৫ মিনিট লাগছে আসতে। তিনি এখন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি জানান, হাসপাতালে বিদ্যুৎ চলে গেলে ১৫ মিনিট পরে আসছে। ওয়ার্ডের মধ্যে ফ্যান না চলায় দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা তৈরি হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি মারা গেলাম। পিতাকে নিয়ে হাসপাতালে ৬দিন আছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দহিজুড়ি গ্রামের সোহাগ হোসেন। তিনি জানান, হাসপাতালে বিদ্যুৎ খুব বেশি আসা যাওয়া করছে। বিদ্যুৎ চলে গেলেই কেমন দম বন্ধ হয়ে যাওয়া পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এতে করে ভর্তি রোগীদের মনবল ভেঙ্গে যাচ্ছে। হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা ১০/১৫ মিনিট অপেক্ষা করি। না আসলে তবেই জেনারেটর চালু করি। বিদ্যুতের তো আহামরি কোন সমস্যা নেই। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শামীম কবির জানান, করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে মনোবল ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তাদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হওয়া দরকার। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ কামাল হোসেন জানান, ডেথফোবিয়া রোগীর শরীর থেকে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হতে থাকে। এতে রোগীর হৃদরোগের ঝুকি বাড়ায়। যে কোন সময় ষ্ট্রোক করতে পারে। তখন মৃত্যু ভয় কাজ করে। চিকিৎসার ভাষায় বলে ডেথ ফোবিয়া। তিনি বলেন, করোনা ছাড়াও যে কোন রোগ হলে হার্ট দুর্বল হয়ে যায়। ফলে রোগীর মনোবল বাড়াতে দরকার দ্রæত সমস্যার সমাধান। বিদ্যুৎ না থাকার কারণ ছাড়াও নানা সময় রোগীর মনোবল ভেঙ্গে যেতে পারে। মনোবল চাঙ্গা করতে রোগীদেরকে আশ্বস্ত করাই তখন একমাত্র সমাধান বলে তিনি মনে করেন।