ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
ভারতে গিয়ে নিঁখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকান্ডের খবরে স্তব্দ হয়ে পড়েছে গোটা কালীগঞ্জবাসী। তার লাশ উদ্ধার না হওয়াতে মৃত্যু নিয়ে এখনো ধোয়াশা কাটেনি। প্রতিদিনের মত বৃহস্পতিবার এমপির শহরের বাসভবন ও পাশেই দলীয় কার্যালয়ের সামনে সহস্রাধীক নারী পুরুষ জনতার ভীড় জমে।
এদিকে তার মৃত্যুর খবরে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বেলা ১২ টার পর ভূষন রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা, দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় পতাকা উত্তোলনকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পৌর আ’লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি অঝোরে কেঁদেই চলেছেন। পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আয়ুব হোসেন, মতিয়ার রহমান মতি, ওহিদুজ্জামান ওদু ও মোস্তাফিজুর রহমান বিজু সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। তারা কালো ব্যাচ ধারন সহ শুক্রবার জুম্মাবাদ মসজিদে দোয়া মাহফিল করবেন বলেও ঘোষনা দেন।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, আনারকে যারা হত্যা করেছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক বিচার করতে হবে। আমরা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানায় দ্রুত আমাদের এমপি’র মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করবেন।
এমপি আনার আ’লীগের মনোনিত টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দলীয়ভাবে আগামী শনিবার সকালে উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়ে সভা আহব্বান করে আরো বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করবেন বলেও জানান নেতৃবৃন্দ।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ আবু আজিফ জানান, এমপি আনারের নিখোঁজ এসব ঘটনা নিয়ে তার সেজো ভাই এনামুল হক ইমান গত ১৯ মে কালীগঞ্জ থানাতে একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি আমাদের উর্ধতন মহলে অবহিত করেছি। এমপি আনারের বিষয়টি তাদের সরকারের উধৃতন সংস্থাগুলো পর্যবেক্ষন করছেন বলে যোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১২ মে দর্শনার গেদে বর্ডার দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মন্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে ওঠেন। পরের দিন ১৩ মে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ১৫ মে বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাসের হোয়াটস এ্যাপে ম্যাসেজ করে জানান তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। ১৬ মে এমপির ব্যক্তিগত গাড়ি চালক তরিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনেও একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানান দিল্লি যাওয়ার কথা। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপর থকে পরিবার ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাকে ফোনে বা কোনো মাধ্যমে না পেয়ে বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানান উদ্বিগ্ন এমপি পরিবার। এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে থানায় একটি মিসিং ডাইরি করেন এমপি’র পরিচিত ভারতের বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস। ১৯ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানাতেও তার সেজা ভাই একটি নিঁখোজ ডায়েরি করেছেন।