28.9 C
Bangladesh
Wednesday, 9, July 2025
spot_img

বজ্রপাতের সময় যে দোয়া পড়তে হয়

আকাশে মেঘ দেখেই মোমিন আনন্দিত। একটু পরই আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি হৃদয় শীতল করে দেবে। চারদিকে রিমঝিম বৃষ্টি, বিজলি চমকিয়ে মেঘের গর্জনে বজ্রপাত যা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই সংঘটিত হয়।

আল্লাহ বলেন, তাঁরই ভয়ে তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্রধ্বনি এবং ফেরেশতারা। তিনি বজ্রপাত করেন, এরপর যাকে ইচ্ছা তাকে তা দ্বারা আঘাত করেন; তথাপি তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতণ্ডা করে, অথচ তিনি মহাশক্তিশালী।’ সুরা রাদ, আয়াত ১৩।

আকাশে মেঘাচ্ছন্ন আর রহমতের বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে বিভিন্ন সময় মানুষের হৃদয়ে ভয় কম্পন হয়। অনেক সময় মানুষের প্রাণ পর্যন্ত কেড়ে নেয়। এজন্যই যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন কিংবা ঝড়-বাতাসের সময় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত।

তখন তিনি বিভিন্ন দিকে পায়চারি করতেন এবং দোয়া পড়তে থাকতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি’। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সমূহ কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আর এ বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সমূহ বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই। এরপর যখন বৃষ্টি হতো তখন তিনি শান্ত হতেন। যা আমরা মুসলিমের হাদিসের মাধ্যমে জানতে পারি।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে  জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল! লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয় কিন্তু আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন! জবাবে রসুলুল্লাহ বললেন, আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে বৃষ্টি বর্ষণের আকারে আজাব পতিত হয়েছিল।’

বজ্রপাত আওয়াজ শুনে নিম্নবর্ণিত দোয়া পড়া জরুরি। যা প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রিয় উম্মতদের শিক্ষা দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া পড়তেন, আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা ওয়া আ-ফিনা-ক্ববলা জা-লিকা। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন।’ তিরমিজি।

এ ছাড়া বজ্রপাতের শব্দ শুনে, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা’অদু বিহামদিহি’। কিংবা ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, পাঠ করলে মহান আল্লাহ বজ্রপাত থেকে রক্ষা করবেন ইনশা আল্লাহ। সর্বোপরি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বা বৃষ্টি দেখে  আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এরপর ঝড় তুফান ও বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে শয়তানের  ওয়াসওয়াসা বা  প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ অর্থ, মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোনো আশ্রয় ও সাহায্য নেই’ পাঠ  করতে হবে।

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও বজ্রপাতের সময় কোরআন তিলাওয়াত, তসবিহ,  অতিরিক্ত তওবা ও প্রিয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করব। সব সময় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেব। আল্লাহর ইবাদত ও তাঁর প্রিয় রসুলের সুন্নাহ দিয়ে জীবন সাজানোর মাধ্যমে মুক্তি পাওয়া যাবে বজ্রপাতসহ বিভিন্ন বিপদাপদ থেকে।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles