28.9 C
Bangladesh
Thursday, 19, June 2025
spot_img

ভাঙ্গা ব্রিজে ৭মাস পার ভরসা কাঠের সেতু

শেখ ইমন, শৈলকুপা, ঝিনাইদহ।

ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে আছে ৭মাস। তাতে দূর্ভোগে পড়েছে প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। ব্রিজটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন-নিবেদন জানিয়েও হয়নি কাজ। থানা সদরের সাথে এলাকার যোগাযোগ করতে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছিলো। উপায়ন্ত না দেখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিকল্প হিসেবে অস্থায়ীভাবে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন। এতে ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারায় দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে। আর কতৃপক্ষ বলছে, ব্রিজের বরাদ্দ চাহিদা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়,ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চলতি বছরের ২০ মে হাকিমপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ব্রিজ ভেঙে বালুবোঝাই একটি ট্রাক খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে চরপাড়া, খুলুমবাড়ীয়া, মাদলা, নাদপাড়া, হাকিমপুর ও নলখোলাসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষের থানা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেচ খালের ব্রিজ ভেঙে পড়ে আছে। জনগণের ভোগান্তি দেখে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু নিজ অর্থায়নে ভাঙা ব্রিজের পাশে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেন। এতে চলাচলের উপযোগী হিসেবে স্থানীয়দের ভরসা এখন ওই কাঠের সেতু। বড় যানবাহন চলাচল করতে না পারলেও সাধারণ মানুষ তাদের ছোটখাটো যানবাহন নিয়ে পার হচ্ছে। উপজেলা শহর হয়ে খুলুমবাড়ি গড়াই নদীর ঘাট পার হয়ে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার সরাসরি যোগাযোগের প্রধান সড়ক ব্রিজ এটি। শৈলকুপার খুলুমবাড়ি, চরপাড়া, মাদলা, পূর্ব মাদলা, নলখোলা, জালশুকা, হাকিমপুর, হরিহরা, সাধুহাটি, বরিয়া, খালকুলা, কাতলাগাড়ি, কাশিনাথপুর, ডাউটিয়া ও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সুবর্ণখোলা, ভাতশালা, কেয়াগ্রাম, কসবামাজাইল, নটাভাংগাসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের জনসাধারণ তাদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে শৈলকুপা বাজার ও খুলুমবাড়ি বাজারে যাতায়াত করছে সেচ খালের এই কাঠের সেতু দিয়ে। তবে বড় যানবাহন নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে আগের মতোই দূরের ব্রিজ খুঁজে পার হতে হচ্ছে।

স্থানীয় খুলুমবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন জানান, ‘দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস ব্রিজ ভেঙে থাকায় প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ইচ্ছা থাকলেও নিয়মিত বাজারে আসতে না পারায় আমাদের বাজারের ব্যবসায় বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কাঠের সেতু দিয়ে মানুষ পার হতে পারলেও ভারি যানবাহন পার হতে পারছে না।’

নলখোলা গ্রামের ভ্যানচালক অছেল মন্ডল বলেন, ‘ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় লোকজন চলাচলে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। আমরা চলতে পারছি না। কাঠের সেতু দিয়ে বড় কোনো গাড়ি পার হতে পারছে না। তাই ব্রিজটি অতিদ্রæত হওয়া দরকার। তা না হলে জনগণের খুবই সমস্যা।’

আব্দুল মান্নান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে হচ্ছিল আমাদের এলাকার মানুষদের। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি যাতায়াতে করতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে না আসলেও চেয়ারম্যানের নজর এড়াতে পারেনি। তিনি কাঠ দিয়ে সেতু তৈরি করে দেওয়ায় অনেকটাই দুর্ভোগ কমে গেছে। তবে দ্রæত ব্রিজটি সংস্কার করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

চরপাড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজটি নিয়ে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অনেকবার বলেছেন। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেন না। চেয়ারম্যান কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়ায় জনসাধারণের কিছুটা দুর্ভোগ কমেছে। তবে বড় যানবাহনগুলো আগের মতোই অনেক পথ ঘুরে যাচ্ছে।

হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে আছে। জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে নিজ অর্থায়নে এই কাঠের সেতু তৈরি করে দিয়েছি। তবে শিগগিরই ব্রিজটি স্থায়ীভাবে নির্মাণের দাবি আমাদের।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, এই ব্রিজের জন্য বরাদ্দ চাহিদা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles