মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ করেছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তবে এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে যেকোনো সময় শাটডাউন ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেলে প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে একথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, সারাদেশে শাটডাউনের প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় সরকার তা ঘোষণা দেবে। আগের চেয়ে বিধিনিষেধ আরও কঠোর হবে। করোনা সংক্রমণ কমানোর জন্য যা করা প্রয়োজন হবে আমরা তাই করব।
তিনি আরও বলেন, মাঝে আমাদের সংক্রমণ ৭ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখনো অনেক জায়গা আছে, যেখানে সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে আছে। ইতোমধ্যে ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোতে লকডাউন দিয়েছি। তারপরও ঢাকার মধ্যে লোকজন এসে যাচ্ছে। সংক্রমণ কমানোয় পদক্ষেপ নিতে আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড-১৯ কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’- এর সুপারিশ করা হয়।
এতে বলা হয়, দেশে কোভিড-১৯ রোগের ভারতীয় ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশটির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। এটি প্রতিরোধে খণ্ড খণ্ডভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
সুপারিশে বলা হয়, শাটডাউন চলা অবস্থায় জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেনো, সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন‘ ঘোষণা দেয় সরকার।
পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল রোজার ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক বসিয়ে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।
তবে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে বিধিনিষেধ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুন বিধিনিষেধ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার, যা ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে।