ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আমন ধানের খেতে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকা দমনে ব্যর্থ হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পোকা দমন বা নিধনে উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন না বলে কৃষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের বড় মৌকুড়ি, ছোট মৌকুড়ি, নবগ্রাম, সারুটিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় সব জমির আমন ধানের গাছে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ ধান গাছের পাতা মরে হলুদ রং ধারণ করেছে। কোনো কোনো জমির ধানগাছ প্রায় পাতাশূন্য মাটিতে মিশে যাচ্ছে। মাজরা দমনে কৃষকেরা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো ধরনের সুফল পাচ্ছেন না।
বড় মৌকুড়ি গ্রামের কৃষক নিয়ামত আলী বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ব্রি ৩৩ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন। তারসহ গ্রামের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা দমনের জন্য প্রায় সব কৃষক দানাদার ও তরলজাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করছেন, কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাজরার আক্রমণ।
একই গ্রামের কৃষক বল্টু সিকদার অভিযোগ করেন, তাঁরা ধান নিয়ে চরম বিপদে থাকলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কেউ ধানের খোঁজ খবর নেননি।
একই অভিযোগ করে কৃষক রুবেল বলেন, তাদের গ্রামে ফসলের দেখভালের জন্য যাকে দায়িত্ব দেওয়া আছে, বেশির ভাগ কৃষক তাকে চেনেন না। এ কারণে পোকা দমনে তারা কোনো সাহায্য ও সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
নবগ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাঠে আমন ধানের গাছে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। ঔষুধ বিক্রেতাদের পরামর্শে ফুরাডান, ভিরতাগো কিংবা আলটিমা প্লাস দিয়েও কোন উপকার পাচ্ছিনা। পোকা দমন করা না গেলে ধানের ফলনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
কৃষি কর্মকর্তা প্রদ্যুৎ কুমার গুহ জানান, যেসব এলাকায় ধানখেতে মাজরা পোকার আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, সেই এলাকার কিছু কৃষক বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। ওই এলাকায় কৃষি অফিস থেকে দ্রুত অফিসার পাঠিয়ে মাজরা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শৈলকুপা উপজেলায় মোট কৃষি ব্লক আছে ৪৩ টি কিন্তু অফিসার আছে মাত্র ২২ জন । অফিসার স্বল্পতার কারনে আমরা কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছিনা। আশা করছি ছানটাপ, ব্রাভো, রাইডার প্লাস এর মতো ঐষুধ প্রয়োগ করলে মাজরা দমন করা সম্ভব হবে এবং কৃষক উপকৃত হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ মৌসুমে উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হবে।