28.9 C
Bangladesh
Thursday, 19, June 2025
spot_img

সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও আবদুল্লাহ আল মামুন আটক

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে সাবেক এই দুই পুলিশপ্রধানকে রাজধানী থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুজনকেই ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক।

ডিএমপি জানায়, সাবেক আইজিপি শহীদুল হককে আটক করা হয় উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে। এছাড়া চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করায় রাতে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। চৌধুরী মামুন পতিত শেখ হাসিনা সরকারের অতি আস্থাভাজন কর্মকর্তা ছিলেন। আইজিপি হওয়ার পর দুই দফায় তার চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

পুলিশসূত্র বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে আটক করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাদের কী ভূমিকা ছিল— এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না।

শহীদুল হক ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ জেলায় কার্যভার পালন করেছেন। ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৪ সালের শেষদিন আইজিপির দায়িত্ব পান এবং ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান।

শহীদুল হকের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নরবালাখানা গ্রামে। তার ছোট ভাই ইসমাইল হক জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আরেক ভাই নুরুল হক ব্যাপারী নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শহীদুল হক শরীয়তপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম (সদ্য সাবেক) মহাপরিদর্শক ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। এরপূর্বে তিনি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র‌্যাব) মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ছিলেন।

চৌধুরী মামুনের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ১৯৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার, এডিসি (ডিএমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরে তিনি ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সদর দপ্তরে ডিআইজি (অপারেশনস) এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি পদে দায়িত্ব থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপি পদে পদোন্নতি পান।

২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও তাকে পুনরায় দেড় বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেয় পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর গত জুলাইয়ের ৫ তারিখে পুনরায় তাকে আরও এক বছরের জন্য দ্বিতীয় দফায় চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান। এসময় অন্তর্বর্তী সরকার তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনেই ছিলেন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles