28.9 C
Bangladesh
Tuesday, 24, June 2025
spot_img

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুমের কল্যাণকর পদ্ধতি অনুসরণ করুন

প্রতিদিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম হচ্ছে সেই সময় যখন আমরা আমাদের চারপাশ সম্পর্কে অবহিত থাকি না। যখন মানসিক ক্রিয়া ও ইচ্ছাশক্তি বন্ধ থাকে। মহান প্রভু ঘুমের উপযোগী সময় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন রাতকে এবং ঘুমের ভালো পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাতকে পরিয়েছেন অন্ধকারের চাদর। তাই তো মানুষ দিনের কাজ শেষে যখন রাত আসে তখন পরদিনের কাজের শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ঘুমায়, বিশ্রাম নেয়। এ ঘুম আমাদের জন্য যে কত বড় নিয়ামত তা আল্লাহতায়ালা কোরআনে বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রাম, তোমাদের জন্য রাতকে করেছি আবরণ -স্বরূপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ সুরা নাবা, আয়াত ৯-১১।

আমরা যতক্ষণ জেগে থাকি ততক্ষণ প্রভুর বেঁধে দেওয়া নিয়মে আমাদের শরীরে অ্যাডেনোসিন রসায়ন জমা হতে থাকে, একসময় এটি এত বেশি হয়ে যায় যে, আমাদের ঘুমের প্রয়োজন হয়। আর এ ঘুমের মধ্যেই আমাদের শরীরের পেশিকলার ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি, ক্ষতিগ্রস্ত কোষের প্রতিস্থাপন, স্মৃতি সংরক্ষণ ও সারা দিনে জমা পড়া স্মৃতি ভালোভাবে সাজানো হয়ে থাকে। তাই আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য রাত জাগা পরিহার করা উচিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এশার নামাজের পর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতেন এবং রাতের শেষ ভাগে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। ঘুমের কল্যাণকর পদ্ধতি হলো তাঁর শেখানো পদ্ধতি। ঘুমের আগে করণীয় হলো বিছানা ঝেড়ে নেওয়া। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ বিছানায় আশ্রয় নিতে যায় তখন সে যেন তার বিছানা ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না, তার অনুপস্থিতিতে বিছানার ওপর কী পতিত হয়েছে।’ বুখারি।

ডান কাঁধে ঘুমানো : রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তুমি বিছানায় আসবে তখন নামাজের অজুর মতোই অজু করবে। এরপর ডান কাঁধে শয়ন করবে।’ বুখারি।

ডান গালে হাত রাখা : হজরত হাফসা (রা) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ যখন শয়ন করতে চাইতেন তখন তাঁর ডান হাত ডান গালের নিচে রাখতেন।’ আবু দাউদ।
সুরা পড়ে শরীরে ফুঁ দেওয়া : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমের আগে দুই হাতের তালু একত্রিত করে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। এরপর তিনি উভয় হাত দিয়ে মাথা, চেহারা ও সারা শরীরে যথাসাধ্য হাত বুলিয়ে নিতেন। এমনটি তিনি তিনবার করতেন।’ বুখারি।
আয়াতুল কুরসি পড়া : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তুমি তোমার বিছানায় গমন কর, তখন আয়াতুল করসি পাঠ কর।’ বুখারি।

সুরা কাফিরুন পড়া : হজরত ফারওয়া ইবনে নাওফাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত নাওফলকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘তুমি সুরা কাফিরুন পাঠ করে তারপর ঘুমিয়ে পড়। কেননা তা শিরক থেকে অবমুক্তির ঘোষণা।’ আবু দাউদ।

দোয়া পড়া : মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘুমাতে যেতেন তখন বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া’, আর যখন জাগতেন তখন বলতেন, আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর’ অর্থাৎ, ‘সব প্রশংসা ওই আল্লাহর, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করেছেন। তাঁর করায়ত্তে আমাদের পুনরুত্থান।’ বুখারি।

তসবিহ পড়া : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যখন বিছানায় গমন করবে তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলবে।’ বুখারি।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles