নিজ বাড়িতে স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৫০) মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছিলেন। তাকে দ্রæত শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যান তিনি সকাল ৮টায়। স্বামী নুর ইসলাম (৬০) তখনও মুমুর্ষ। অক্সিজেন চলছে। মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। গোটা পরিবার যেন অস্থির। ঝিনাইদহের শৈকুপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে পিন পতনের নীরবতা। স্ত্রী রাহেলা মৃত্যুর তিন ঘন্টা পর স্বামী নুর ইসলামও পাড়ি জমান পরোপারে। তিন ঘন্টার ব্যবধানে স্বামী স্ত্রীর মৃত্যুর খবরে বাগুটিয়া গ্রামটি শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। গ্রামবাসি জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় মুমুর্ষ অবস্থায় রাহেলা খাতুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এরপর তার স্বামী নুর ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটে বেলা ১১টা দিকে তারও মৃত্যু হয়। শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ একে এম সুজায়েত হোসেন জানান, রাহেলা খাতুন ও তার স্বামী গত ১০ দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সকালে রাহেলাকে মৃত অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর মৃত ব্যক্তির নমুনা পূনরায় এন্টিজেন টেস্ট করলে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর তার অসুস্থ্য স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এদিকে ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে স্বামী-স্ত্রীকে শোক বিধুর পরিবেশে দাফন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির সদস্য হাফেজ মাওলানা খায়রুল ইসলাম ও মাওলানা মোঃ শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে লাশ দুইটি দাফন করা হয়। এই নিয়ে ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৮৭ জনের লাশ দাফন করলো।